স্বাগত ২০২৩

বাংলাদেশী ডেস্ক : স্বাগত ২০২৩। এখনো পুরোপুরি কাটেনি মহামারী। অনিশ্চয়তা চারি দিকে। জনজীবনে অস্বস্তি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। নাগরিক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে। সুখবর নেই রাজনীতিতে। সঙ্কট রয়েছে অর্থনীতিতেও। তবুও চিরাচরিত নিয়মে এসেছে নতুন বছর। নতুন বছর মানেই নতুন আশা, নতুন স্বপ্ন। নতুন বছরে নাগরিক প্রত্যাশায় ভিন্নতা আছে। কারো চিন্তা রাজনৈতিক, কারো অর্থনৈতিক। আবার কারো সামাজিক। সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা নিরাপত্তা, সুশাসন ও গণতন্ত্রের। সাথে যোগ হয়েছে করোনা থেকে মুক্তির বিষয়টি। কার্যত ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় এখন পুরো বাজারদর, নিরাপত্তাসহ  ভালোভাবে বেঁচে থাকার কথা। ২০২২ সাল কেটে গেল বিশ্বজুড়ে জেঁকে বসা করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়ার ভয়াবহ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশে সরকারিভাবে প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘোষণা আসে ৮ মার্চ। এই করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে গিয়ে স্বাস্থ্যব্যবস্থার কঙ্কাল মূর্তির উন্মোচন ঘটেছে। করোনা সংক্রমণে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছে বহু মানুষ। মৃত্যু পথযাত্রী রোগীদের নিয়ে আপনজনেরা একের পর এক বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে রোগীকে ভর্তি করাতে পারেননি। চিকিৎসক কিংবা আত্মীয়স্বজনদের অমানবিক রূপটিও প্রকাশ পেয়েছে। সরকার করোনা সংক্রমণ কমিয়ে আনার জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। দূরপাল্লার বাস-ট্রেন বন্ধ ছিল। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলকারখানা বন্ধ হয়ে যায়। পোশাক খাত বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। সরকার প্রণোদনা হিসেবে অতি স্বল্পসুদে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ঋণ ঘোষণা করে। এরমাঝেই শুরু হয় ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ। বলতে গেলে মরার উপর খাড়ার ঘা। এমনিতে মানুষ দুঃখ কষ্টে আছে, কোনো রকমে দিন এনে দিন খাচ্ছে।

তার ওপর রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ মানুষের জীবনকে ভয়াবহ হুমকিতে ফেলেছে। সারাবিশ্বে এখন মন্দা। দ্রব্যমূলের আকাশছোঁয়া দাম। কোনোভাবেই মানুষের দৈনিন্দ চাহিদা মেটাতে পারছে না। যুদ্ধেও প্রভাবে দেখা দিয়েছে জ্বালানি সংকট। জ্বালানি সংকটের জন্য সারা পৃথিবী আজ ভয়াবহ দিন পার করছে। গ্যাসের অভাব দেখা দিয়েছে প্রকট আকারে। খাদ্যপণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। সারাবিশ্ব এখন দুইভাগে বিভক্ত। যুক্তরাষ্ট্র জোট আর রাশিয়া জোট। এর প্রভাবে মধ্যভিত্ত ও নিম্নভিত্ত দেশগুলো ভয়াবহ সংকটে দিন পার করছে। তাই আগামী বছরে সবার একটাই আশা অন্তত যুদ্ধটা থেমে যাক।  নতুন বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল দেখতে চান সাধারণ মানুষ। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কথা হয় গৃহবধূ মমতাজ বেগমের সাথে। তার কথা, ‘গেল বছর পেঁয়াজ-আলুর দাম নিয়ে যা ঘটেছে তাতে আতঙ্কিত হয়েছি। মনে হয়েছে বাজারের ওপর কারোর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সিন্ডিকেট করে যেকোনো শক্তিশালী গ্রুপ চাইলে যেন যা কিছু তাই করতে পারে। এটার অবসান চাই।’ নিরাপত্তার বিষয়টিকে মানুষ এখন শুধু আক্ষরিক অর্থে নিরাপত্তা মনে করেন না। তারা এটাকে অনিশ্চয়তার দিক থেকে দেখেন। কাজের নিরাপত্তা, চলাফেরার নিরাপত্তা, ভালো থাকার নিশ্চয়তা এসব দিক তারা বিবেচনায় নেন। নতুন বছরে এসব দিক দিয়ে সবাই ভালো থাকতে চান। একাদশ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিপাকে থাকা বিরোধী দলগুলো নতুন বছরে সরকার পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নতুন বছর পরিবর্তনের। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দানব সরকারকে সরাতে হবে। সরকারি দল আওয়ামী লীগ বিরোধী দলগুলোকে তেমন পাত্তা দিচ্ছে না। নতুন বছর তাদের জন্য বেকায়দার কিছু হবে না, এমনটাই তারা ভাবছেন।