সাংবাদিক-বিক্ষোভকারীদের ওপর ‘অতর্কিত’ হামলা, উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র

টানা সপ্তম দিনের মতো বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ৪০টি বেশি শহরে কারফিউ জারি করা হলেও বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমেছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, সাংবাদিক ও বিক্ষোভকারীদের ওপর ‘অতর্কিতে’ হামলা চালিয়েছে দেশটির পুলিশ।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত তিন দিনে অন্তত ৯০ জন সাংবাদিক পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন। সাংবাদিকরা তাদের পরিচয় পত্র দেখালেও পুলিশ তাদের ওপর হামলা চালায়। পরিচয় পত্র দেখালে পুলিশ জানায়, এতে তাদের কিছু যায় আসে না।

ফটো সাংবাদিক লিন্ডা তিরাডো বিক্ষোভের ছবি তুললে গিয়ে পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন। তিনি জানান, চিরকালের জন্য তার এক চোখ দিয়ে আর দেখতে পাবেন না। পুলিশের রাবার বুলেট তার চোখে লেগেছে।

এছাড়া রয়টাসের আরও দুই সাংবাদিক জানান, পুলিশের রাবার বুলেটে তারা বিদ্ধ হয়েছেন। সাংবাদিকরা জানা, পুলিশ তাদের সরাসরি লক্ষ করে হামলা চালিয়েছে।

এর আগে গত ২৯ তারিখে বিক্ষোভের কর্মসূচি সরাসরি সম্প্রচার করার সময় মিনেসোটা পুলিশ সিএনএন-এর সাংবাদিক ও ক্রুদের গ্রেফতার করে। কী কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে এর জবাবে কোন উত্তর দেয়নি পুলিশ। পরে অবশ্য তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

এদিকে দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও গুঁড়া মরিচ দিয়ে হামলা চালিয়েছে পুলিশ। বিভিন্ন শহরে দফায় দফায় চলে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ। আজ মঙ্গলবার অকল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়ায় কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

কারফিউ উপেক্ষা করে রাস্তায় বিক্ষোভকারীরা, উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র

আটলান্টা পুলিশ জানিয়েছে তারা এখন পর্যন্ত ৩৫০জনকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন হোয়াইট হাউজের সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষ হয়। সেইসঙ্গে শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের অতর্কিত হামলার খবর পাওয়া গেছে।

তবে বিভিন্ন শহরে পুলিশের গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া ও দোকানপাট লুটের ঘটনাও ঘটেছে। দেশটির ন্যাশনাল গার্ড জানিয়েছে, ওয়াশিংটন ও ১৫ রাজ্যে তাদের ৫ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

গত ২৫ মে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বড় শহর মিনিয়াপলিসে পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ নির্মমভাবে নিহত হন। এরপরই শুরু হয় বিক্ষোভ। ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় চার পুলিশ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করে মিনিয়াপলিস পুলিশ বিভাগ।

এদের মধ্যে ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরা ৪৪ বছর বয়সী দেরেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ফ্লয়েডকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। বিবিসি, আল জাজিরা, সিএনএন, এনডিটিভি।

Ittefaq