রাজধানী ঢাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ করোনায় আক্রান্ত

অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় দেখা গেছে রাজধানীর ৪৫ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের ২৪ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি। করোনাভাইরাসের জিন বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা অনুমান করছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছিল।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ও জিন রূপান্তর নিয়ে গবেষণার এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) ও বেসরকারি আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) যৌথভাবে এই গবেষণা করেছে। এই গবেষণায় আর্থিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।

গবেষণায় দেখা গেছে ঢাকা শহরের বস্তির প্রায় তিন চতুর্থাংশ মানুষ ইতিমধ্যে সংক্রমিত হয়েছেন। করোনার কোনো লক্ষণ ছিল না এমন ৪৫ শতাংশ নগরবাসী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে রক্ত পরীক্ষায় ধরা পড়েছে।

গবেষণার জন্য ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্য থেকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে ২৫টি ওয়ার্ড বেছে নেওয়া হয়। প্রতি ওয়ার্ড থেকে একটি মহল্লা বাছাই করা হয়। প্রতি মহল্লা থেকে ১২০টি খানা জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ৮টি বস্তিকে এ জরিপে যুক্ত করা হয়। ঢাকা শহরের সাধারণ খানার নমুনা সংগ্রহ করা হয় মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য জুলাই পর্যন্ত। আর বস্তির মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয় মধ্য জুলাই থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত।

গবেষকেরা বলছেন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, চিকিৎসা ও টিকা দেওয়ার ব্যাপারে এসব তথ্য কাজে লাগবে। গবেষণার তথ্য এমন সময় প্রকাশ করা হলো যখন দেশে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আলোচনা চলছে। আসন্ন শীত মৌসুমে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকির কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি তাদের আছে।

অনুষ্ঠানে গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন আইইডিডিআর ও আইসিডিডিআরবির গবেষক ও বিজ্ঞানীরা। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মীরজাদী সেব্রিনা। অনুষ্ঠানে অনলাইনে যোগ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক।