করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ঝুঁকিতে কানাডা
করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে কানাডায়। আগামী কয়েক সপ্তাহ কানাডার জন্য খুবই কঠিন সময় যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এ কারণে নাগরিকদের সতর্ক করে তাঁরা বলছেন, সংক্রমণ এড়াতে এই কয়েক সপ্তাহ যতটা সম্ভব ঘরেই থাকুন।
সিএনএনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অটোয়ায় ৯ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বিশ্বের অনেক দেশেই দ্বিতীয় দফায় করোনার সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে। এই মহামারিতে কানাডা সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে আছে। ৮ অক্টোবর দেশে একদিনে সর্বোচ্চ করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
কানাডার সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, দেশে দৈনিক করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে। গত কয়েক সপ্তাহ থেকে দিনে গড়ে দুই হাজারের মতো করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে। এ ছাড়া গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে এই হার ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য বলছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকে এ পর্যন্ত কানাডায় এক লাখ ৭৫ হাজার ৩৮০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর এতে মৃত্যু হয়েছে নয় হাজার ৫৯৩ জনের।
বিজ্ঞাপন
তরুণেরাই করোনার স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না। এর প্রভাব পড়ছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়। এভাবে জীবনের ঝুঁকি নেওয়া মোটেও ঠিক হচ্ছে না।
ক্রিশ্চিয়ান দুবে, কুইবেক প্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসপাতালে করোনায় সংক্রমিত রোগী ভর্তি ও মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বর্তমানে দেশটির হাসপাতালে ছয় শতাধিক করোনায় সংক্রমিত রোগী ভর্তি আছে। হাসপাতালে দিনে গড়ে ১৮ জনের মৃত্যু হচ্ছে। নতুন সংক্রমণের ৮০ শতাংশের বেশি অন্টারিও ও কুইবেক প্রদেশের। এর মধ্যে কুইবেক প্রদেশের মন্ট্রিল ও কুইবেক শহরে প্রতিদিন করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এই দুই শহরে গত সপ্তাহ থেকে রেস্তোরাঁ ও বার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ প্রদেশে ৬ অক্টোবর নতুন করে এক হাজার ৩৬৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত এটাই একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ। এ কারণে প্রদেশের তরুণসহ সব নাগরিককে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে যথাসম্ভব ঘরে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে দিন দিন হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় টরন্টো ও মন্ট্রিল শহরেও রেস্তোরাঁ ও বার সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কুইবেকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান দুবে ৬ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তরুণেরাই করোনার স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না। এর প্রভাব পড়ছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়। এভাবে জীবনের ঝুঁকি নেওয়া মোটেও ঠিক হচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছেন, এই সময় যতটা সম্ভব ঘরেই থাকতে হবে। আগামী সপ্তাহের থ্যাংকসগিভিং হলিডেও ঘরে কাটান। এ সময় মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।
কানাডার প্রধান জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা থেরেসা টাম ৬ অক্টোবর বলেছেন, এ বছর থ্যাংকসগিভিং ডে উদ্যাপনে সবার জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সম্ভব হলে ভার্চ্যুয়াল উদ্যাপন বা নিরাপদ দূরত্ব মেনে উদ্যাপন করতে হবে। কানাডায় এ বছর ১২ অক্টোবর থ্যাংকসগিভিং ডে উদ্যাপন করা হবে।