বাঁচাও খালেদা

বিশেষ রিপোর্ট : খালেদা জিয়া কেনো উন্নত চিকিৎসার সযোগ পাবেন না? মানবিক দিক থেকে সব প্রশ্নকে ছাপিয়ে এই প্রশ্নটির মখোমুখি আজকের বাংলাদেশ! পুরো দেশ ও জাতিকে এই প্রশ্ন এসিড টেস্টের মুখোমুখি করলেও তোষামোদির তৈলাক্ত পরিবেশে এই জরুী প্রশ্নটি উত্থাপনের সৎসাহস দেখাতে পারছেনা কোনো গণমাধ্যম অথবা বিবেকবান কোনো পক্ষ। প্রশ্নবিদ্ধ আইন-আদালত ছাড়া কোনো গ্রহযোগ্য ব্যাখ্যা সরকার দিতে পারছে না। যে দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের জন্য তিনি ও তাঁর পরিবারের অসামান্য অবদান রয়েছে, সেখানে রাজনীতি ও দলের বাইরে কোটি কোটি মানুষের কি কোনো ভূমিকা নেই? তাঁর স্বামী মেজর জিয়া জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেন, নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেন। দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে বহুদলের শাসন আর যুগোপযুগী অর্থনীতি চালু করে আধুনিক বাংলাদেশের যাত্রার সূচনা করেন। যার সুফল আজকের বাংলাদেশ। এখন দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি- এমনকি মন্ত্রী-এমপিরা সামান্য নাক-কান-গলার চিকিৎসার জন্যও বিদেশে যান, অথচ তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও দেশের এমন একজন জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বহু রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু পথযাত্রী হলেও যথাযথ চিকিৎসার সযোগ ও অধিকার বঞ্চিত। বারবার তাঁর চিকিৎসার আবেদন উপেক্ষিত হয়েছে, এমনকি কারো কারো কাছে নির্দয় তামাশার বিষয় হয়েছে। আত্মঘাতী বাঙালীর অপবাদ এই এসিড টেস্টের প্রশ্নে যেনো এক কালো ইতিহাস রচনা করতে চলেছে! মৃত্যুপথযাত্রী মানুষের চিকিৎসা নিয়ে তামাশা দেখে সেই একই প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসছে। তাহলে বাংলাদেশ কি কারবালাকেও হার মানাতে চলেছে? শেখ হাসিনা হিংসা আর বিদ্বেষের রাজনীতির উর্ধ্বে উঠতে পারবেন কি না, সেটাই এখন তাঁর সামনে এসিড টেস্ট। তিনি কারবালার সীমার নাকি মানবতাবাদী মাদার তেরেসার ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন, সেটাই আজ তাঁর সবচেয়ে বড় পরীক্ষা! স্বৈরাচার পতন আন্দোলনের আপোষহীন নেত্রী তিনি যাঁর আপোষহীন নেতৃত্বের কারণেই দেশে আজ রাজনৈতিক সরকার দেশ পরিচালনার সযোগ পেয়েছে ও পাচ্ছে। দলীয় বিরোধের উর্ধ্বে সেই মানুষটি রাজনৈতিক সরকারের কাছ থেকে তার ন্যূনতম মানবাধিকারের গ্যারান্টি পাবেন না? খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে দেশে আটকে রাখার মধ্যে মধ্যযুগীয় আদিম-বর্বরতা ও অসুস্থ বিনোদন ছাড়া আর কিইবা সার্থকতা থাকতে পারে? রাজনৈতিক দলের শাসনের বাংলাদেশে এখন সকল ক্ষমতার মালিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ন্যূনতম মানবিক ভূমিকায় কেনো ব্যর্থ হবেন? আর শেষ পর্যন্ত যদি ব্যর্থও হন, তবে তাঁর ব্যর্থতার দায়ভার এই বিশাল জনগোষ্ঠী কেন নেবে? ১/১১ শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের পর খালেদা জিয়া পত্রিকায় কঠিন বিবৃতি দিয়ে তার প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবি জানিয়েছিলেন। আজ রোগেশোকে কাতর ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার আত্মত্যাগ শেখ হাসিনা ভুলে গেলেও সমগ্র জাতিও কি ভুলতে পারে? আর এসব কারণেই নির্মমতা আর নৃশংসতার ইতিহাস তৈরি করে খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে এগিয়ে আসার দাবি এখন সময়ের সবচেয়ে জরুরী ও সর্বজনীন বিষয়। সরকার বলছে বয়স ও নানাদিক বিবেচনায় খালেদা জিয়া কারাগার থেকে জামিনে আছেন। তিনি যদি নির্বাহী আদেশে জামিনে থাকতে পারেন, তাহলে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে বাধা কোথায়? ১/১১-এর সময় তাঁকে জোর করেও দেশের বাইরে পাঠানো যায়নি। এখন তিনি কেনো পালাবেন? চিকিৎসা শেষে তিনি দেশে ফিরে যাবেন, এটাই স্বাভাবিক। তাহলে অশীতিপর ও বহু রোগে আক্রান্ত একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সরকারের এতো ভয় কিসের? বিদেশে উন্নত চিকিৎসা পাওয়া খালেদা জিয়ার সর্বজনীন মানবাধিকার। তাঁর এই অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান সরকার, তাঁর নিজ দল, এমনকি পুরো জাতির জন্যই একটা অ্যাসিড টেস্ট! খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার বিষয়ে তিনি তাঁর দেশের সরকার ও জনগণের বিশেষ মনোযোগের দাবিদার কেন? তাঁর প্রশাসনের কাছ থেকে দেশ ও জনগণ কিভাবে উপকৃত হয়েছিলো, সেই কারণগুলোর তালিকা অনেক দীর্ঘ। সরকার ও অন্যান্য কতৃপক্ষের স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য প্রাসঙ্গিক কয়েকটি কারণ এখানে তালিকাভুক্ত করে তুলে ধরা হলো০১; তত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তন ও তত্ত¡াবধায়কের অধীনে তিনটি নির্বাচন অনুষ্ঠান। যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছিলো। ০২: দেশব্যাপী চাঁদাবাজী, সন্ত্রাস ও আইন-শৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এলিট ফোর্স র‌্যাব গঠন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায়, অপহরণ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করে পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনার মুখেও র‌্যাব তার কঠিন কর্মকা- নির্ভরযোগ্যতার ভিত্তিতে করতে সক্ষম হয় এবং জনসাধারণের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা ও গ্রহযোগ্যতা অর্জন করে। ০৩: পুঁজি বাজার (স্টক এক্সচেঞ্জ) স্থিতিশীল রাখেন। ০৪: অর্থনৈতিক খাত বিশেষ কওে বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, বিনিয়োগ, শিল্পায়ন ইত্যাদি রাজনীতিমুক্ত রেখেছেন। “রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক-বীমা খোলার যথেষ্ট অনুমতি দেননি। ০৫: কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখেন। ০৬: তেলের দাম আকাশচুম্বী হওয়া সত্তে¡ও মুদ্রাস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন যাতে দ্রব্যমূল্য ক্রয়সীমার মধ্যে থাকে। ০৭: যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র চাপ সত্তে¡ও সেনাবাহিনীকে ইরাকে পাঠাননি। ০৮: যুক্তরাষ্ট্রে ক্যাটরিনা ঘূর্ণিঝড়ের পর ১০ মিলিয়ন ইউএস ডলারের সাহায্য প্রদান করেন, এটা ছিলো যষ্ঠ বৃহৎ সহায়তা, যা যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে বিপুলভাবে প্রশংসিত হয় (গুগল দেখুন)। ০৯: জিয়াউর রহমান মারা গেলে তাঁর এতিম দুই সন্তানের জন্য কুয়েতের তৎকালীন আমীর ২০ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে দেন। বেগম খালেদা জিয়া ওই টাকা বিসিসিআইতে রেখেছিলেন। সেই টাকাটাই ২২ বছরে বেড়ে হয় দুই কোটি টাকা। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে তিনি ওটা দিয়ে গড়ে তোলেন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট। ১০: স্বাস্থ্য খাতে স্যানিটারি টয়লেট তৈরী করা হয়েছে সারা দেশে এমনকি, প্রান্তিক পর্যায়ে। ১১: শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস। ১২: যমুনা সেতু নির্মাণ। ১৩: উপসাগরীয় যুদ্ধের পরে মাইনফিল্ড পরিষ্কার করতে কয়েতকে সাহায্যের উদ্যোগ নেন। জয় করে নেন মধ্যপ্রাচ্যের শান্তিপ্রিয় মানুষের
১৪: মহাখালীতে ঢাকার প্রথম ফ্লাইওভার নির্মাণ। ১৫: এক মিলিয়নের বেশিসংখক গাছ লাগানো হয়েছে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর। ১৬: মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে পূর্ণাঙ্গ আইসিটি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ২০০৩ সালেই দোহায় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের কনফারেন্স-এ বাংলাদেশে ডিজিটালাইজেশনের জগতে প্রবেশ ও অগ্রগতিতে প্রশংসিত হয় এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অনুকরণীয় বলে উল্লেখ করেন তর্কালীন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী কলিং পাওয়েল। ১৭: ভারতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছিলো। ১৮: মিডিয়া সম্পূর্ণ মুক্ত ছিল, যদিও উচ্চ আদালতে একুশে টিভির মামলায় মি, মাহমুদের অংশীদারদের সাথে প্রতারণা করে ব্যক্তিগত লাইসেন্স পাওয়ার জন্য প্রতারণা ও লাইসেন্স জালিয়াতির অভিযোগে একুশের টেরেস্ট্রিয়াল সম্প্রচার রোহিত করে স্যাটেলাইট লাইসেন্স আবেদনের সুযোগ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ১৯: বিচার বিভাগ স্বাধীন ছিল এবং কিছু বিচারিক মৃত্যুদÐ ছিল। ২০: বেসরকারী হাসপাতালগুলিকে উৎসাহিত করা হয়েছিল। যেমন অ্যাপোলো/এভারকেয়ার ইউনাইটেড, স্কোয়ার ইত্যাদি। ২১; সাধারণভাবে কোনও সন্ত্রাসের রাজত্ব ছিল না এবং জনগণ নির্ভীক বােধ করেছিল। এমনি অসংখ্য ইতিবাচক ভূমিকার কথা বলা যাবে। এই তালিকা দীর্ঘ। রাজনীতিতে তাঁর এমনি অসংখ্য সাফল্যের পাশাপাশি সবক্ষেত্রে তাঁর প্রচেষ্টা সফল হয়েছে সেটা হয়তো তিনি নিজেও দাবী করবেন না। এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়, ক্ষমতা ব্যবহারের ব্যাপারে তিনি তিনি যেরূপ লক্ষ্যণীয়ভাবে সংযত এবং দৃষ্টান্তমূলক? ছিলেন, তারো চেয়ে বেশী সতর্ক ছিলেন ক্ষমতার অপব্যবহার যাতে কিছুতেই না হতে পারে। তাঁর শেষ আমলে অর্থাৎ ২০০১ সালের সংসদে দুই তৃতীয়াংশ সমর্থনে তিনি সহজভাবেই দলীয় বিবেচনায় সংবিধান সংশোধন এমনকি একদলীয় জঊঅউ শাসন পর্যন্ত চালু করতে পারতেন, যার উদাহরণ বাংলাদেশে নিকট অতীতে রয়েছে, কিন্তু তিনি তা করেননি। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বিকল করার জন্য তিনি তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করেননি। দেশের বিচার বিভাগ, পুলিশিং এবং আর্থিক ব্যবস্থাকে দলীয়স্বার্থ অথবা যেকোনো কোটারী গ্রুপের কবলমুক্ত রেখেছেন বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ও দেশের স্বার্থে। সবচেয়ে বড় বিষয় ছিলো, তিনি কখনই ব্যক্তিত্বের দেবতু আরোপের সুযোগ দেননি অথবা তোষামোদের সংস্কৃতির বিকাশ হতে দেননি।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা: খালেদা জিয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায়, বেগম জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা তাকে দ্রæত বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন, সেজন্য তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নতুন করে আবেদন করেছেন। এদিকে, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ১৩ নভেম্বর, শনিবার বেগম জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিন রাতে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয় । বেগম জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে তার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাপ্তাহিক সুরমাকে জানান, খালেদা জিয়ার দেহে খনিজ অসমতা চরম আকার ধারণ করেছে। প্রধান ইলেকট্রোলাইট অর্থাৎ গোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ক্লোরিন উপাদানের পরিমাণ কমে গেছে। চিকিৎসকের ভাষায় ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। কী কী কারণে ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স হয়েছে তা খুঁজছেন চিকিৎসকরা। খনিজের ঘাটতি পূরণে রোজই ওষুধের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। পাশাপাশি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইনস্যুলিনের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, তাকে এখনো হৃদযন্ত্রের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সিসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাকে আরও কিছুদিন সেখানেই রাখা হবে। সাধারণ কেবিনে নেয়ার মতো অবস্থা এখনো হয়নি। শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত আছে। কোনো উন্নতি হয়নি। তবে খালেদা জিয়ার শরীরে তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে। শরীর প্রচÐ দুর্বল। খাওয়া-দাওয়ার রুচিও কম। রক্তে হিমোগেøাবিনও অনেক কমে গেছে। রক্তের হিমোগেøাবিন বাড়াতে ইতোমধ্যে দুই ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে। কয়েকবার বমিও হয়েছে। উচ্চ রক্তচাপ তো রয়েছেই। অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের জন্য তাকে দেশের বাইরে নেয়ার বিত্ত নেই। ৭৬ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বহু বছর ধরে আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতার জন্য টানা ২৬ দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ৭ নভেম্বর বাসায় ফেরেন তিনি।
পরিবারের আবেদন: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে সরকারের কাছে ফের আবেদন করেছে তাঁর পরিবার। গত ১১ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর চিঠি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার ভাই কর্তৃক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে করা। আবেদনটির বিষয়ে আইনি মতামত চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায়, বেগম জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা তাকে দ্রæত বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন, সেজন্য তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নতুন করে আবেদন করেছেন। এদিকে, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ১৩ নভেম্বর, শনিবার বেগম জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিন রাতে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
ডা. জাফরুল্লাহর আবেদন: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান, কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সরকার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তাঁকে বিদেশে পাঠাতে জরুরী ও ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, মানুষের অসুস্থতা, চিকিৎসা এসবকিছু রাজনীতির অনেক ঊর্ধ্বে। বিভিন্ন সময়ে শেখ মুজিবের আকাশের মতো উদারতার উদৃতি দিয়ে ডা. চৌধুরী বলেন, ক্ষমতা সাময়িক, কিন্তু জাতীয় নেতাদের ভূমিকা সারাজীবন ইতিহাসে লেখা থাকে। সুতরাং সুচিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার কিছু হলে ইতিহাস শুধু প্রধানমন্ত্রীকে নয়, আমাদের কাউকেই ক্ষমা করবে না। মানবিকতা আর দুর্যোগে কোনো জাতি যদি একত্রিত হতে না পারে, তবে সেই জাতীয়তা আর তাদের মানব সভ্যতার ইতিহাসের পাতায় কলংকের অধ্যায় রচনা করে। তাই মানবতার এই সংকটকালে আমরা সরকার, সকল রাজনৈতিক-সামাজিক শক্তি ও জনগণকে আহ্বান জানাই – বাঁচাও খালেদা, বাঁচাও বাংলাদেশ।